নানা নাতীর ভ্রান্ত কিচ্ছা
প্রিয় ভাই ও বোন! আমরা যখন ছোট ছিলাম, তখন আমরা কমবেশী কিচ্ছা-কাহিনী বা গল্প শুনতাম। বিশেষ করে রাজা-রাণী আর বাদরের কিচ্ছা গুলি ভুলার মত নয়। বানোয়াট জানার পরও এত সুস্বাদু হওয়ার রেকর্ড কেবল কিচ্ছা-কাহিনীর-ই আছে।
প্রিয় ভাই ও বোন! আসুন! আজকে আমরা একটা গল্প শুনি। তবে সেটা রাজা-রাণী কিংবা বাদরের গল্প নয়। বরং এর প্রধান চরিত্রে আছেন বিশ্বনবী সা. ও তাঁর আদরের নাতী হুসাইন রা.।
একদিন ছোট্ট হাসান-হুসাইন নবীজীর সাথে খেলা করছিল। হঠাৎ হুসাইন নবীজীর কোলে বসে বলল, নানাজী! বলুন তো, আপনি বড় না আমি বড়! ছোট্ট নাতীর এমন প্রশ্ন শুনে নবীজী আশ্চর্য হলেন। বললেন, আমি বড়! হুসাইন বলল, না, আমি বড়! নবীজী বললেন, বুঝলাম তুমি বড়; কিন্তু কীভাবে?
হুসাইন তখন প্রশ্ন করল, বলুন তো আপনার পিতার নাম কী? নবীজী বললেন, আব্দুল্লাহ। হুসাইন বলল, আর আমার পিতার নাম জানেন? আমার পিতা হলেন, আসাদুল্লাহিল গালিব আলী ইবনে আবি তালিব।
হুসাইন আবার প্রশ্ন করল, আপনার মায়ের নাম কী? নবীজী বললেন, আমেনা। হুসাইন তখন বলল, আর আমার মায়ের নাম জানেন? আমার মা হলেন, সায়্যিদাতু নিসা-ই আহলিল জান্নাহ-জান্নাতের রমনীদের সরদার ফাতিমাতুয যাহরা।
হুসাইন আবার প্রশ্ন করল, আপনার নানীর নাম বলেন। নবীজী তাঁর নানীর নাম বললে হুসাইন বলল, আর আমার নানীকে চিনেন? আমার নানী হলেন ঐ নারী, যাকে আল্লাহ সালাম পাঠিয়েছেন। আমার নানী হলেন খাদিজাতুল কুবরা।
এবার প্রশ্ন করল, বলুন তো আপনার নানার নাম কী? নবীজী নিজের নানার নাম বললে হুসাইন বলল, আর আমার নানা কে জানেন? আমার নানা হলেন, দোজাহানের সরদার, সায়্যিদুল মুরসালীন, খাতামুন্নাবিয়্যীন মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।
প্রিয় ভাই ও বোন! একবার ভাবুন তো! হুসাইন (রা.)র মত উঁচু মর্যাদার মানুষ বংশীয় ব্যক্তিত্ব নিয়ে গর্ব বা অহংকার করতে পারেন কি?
যাই হোক! কিছু কিছু অসতর্ক বক্তার মুখে খুব চটকদার উপস্থাপনায় এ কিচ্ছাটি শোনা যায়। কিন্তু এর নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্র নেই। এটি একটি বানোয়াট কিচ্ছা। সুতরাং আমাদের জন্য এটা পরিহার করা অপরিহার্য।
No comments